লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও বর্ণনা - Bibaran

Latest

ইসলামিক পেইজ

Thursday, May 14, 2020

লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও বর্ণনা

রমজান অত্যন্ত বরকতময় মাস,এই মাসে এমন একটি রাত রয়েছে। যে রাত এই মাসের মর্যাদাকে আরও বেশি বৃদ্ধি করেছে। সে রাতকে কোরআনের ভাষায় বলা হয় (লাইলাতুল কদর) বা মহিমান্বিত রাত।



করের একটি অর্থ তকদির বা ভাগ্য। এ রাত্রিতে মানুষের পরবর্তী এক বছরের অবধারি।
ভাগ্যলিপি ফেরেশতা দের কাছে হস্তান্তর করা হয়,এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স মৃত্যু রিজিক ইত্যাদির। পরিমান নিদিষ্ট ফেরেশতাগনকে লিখে দেওয়া হয়।


এমনকি এ বছর কে হজম করবে তাও লিখে দেওয়া হয়।  এ রাত্রি পুণ্যময় এবং কল্যান, বরকত, পবিত্রতা  ও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী।  এ রাতেই মাহাগ্রন্হ আল কোরআন অবতীর্ন হয়েছেন এ রাতেই অসংখ্য ফেরে তরা  দুনিয়াতে শান্তির বার্তা নিয়ে আগমন করে থাকেন। একজন্য এই রাতকে হাজার মাস অপেক্ষা শ   
লাইলাতুল কদর  শুধুমাত্র উম্মতেে মুহাম্মাদের বিশে বৈশিষ্ট্য পূর্ববতী কোনো উম্মতকে এই রাত দেওয়া হয়নি। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা)  বলেন, রাসুল (সা) বলেছেন,  নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা আমার উম্মতকে লাইলাতুলকদর দিয়েছেন।  যা পূর্বে কারও কোন উম্মতকে দেওয়া হয়নি।



আমাদের সমাজে (‘লাইলাতুলকদর) বা শবে কদর’ ২৭ রমজানেই পালন বা আদায় করা  হয়। যদিও ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া আছে।

কদর অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট- ইবনে আবি হাতেম (রা.) এর রেওয়াযেতে আছে, রাসূল (সা.) একবার বনি ইসরাইলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন, সে এক হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম জিহাদে মশগুল থাকে এবং কখনো অস্ত্র সংবরণ করেনি। মুসলমানগন একথা শুনে বিস্মিত হন এবং নিজেদের হায়াতকে অতি অল্প মনে করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ সূরা কদর অবতীর্ণ হয়। (মারেফুল কোরআন)

কদরের গুরুত্ব- কদরের মজাদা বোঝানোর জন্য আল্লাহ পাক কুরআনে কারীমে ‘কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই আমি পবিত্র কোরআনুল কারীমকে লাইলাতুল কদরে অবতীর্ণ করেছি। আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কি? লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। উক্ত রজনীতে ফেরেশতাগণ ও জিবরাঈল (আ.) তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে প্রত্যেক বিষয় নিয়ে অবতীর্ণ হন এটা শান্তিময় রজনী যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সূরা আল কদর: ১-৫)


আল্লাহ তায়ালা  পবিত্র । কোরআনে অন্যত ঘোষণা করেছেন । নিশ্চয় আমি তা কুরআন এক বরকত ময় রজনিতে নাজিল করেছি নিশ্চয় আমি সতর্ককারি এ রাতে প্রতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থির করেছি।



কদরের ফজিলত- হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত  রাসুল (সা:) বলেন, যদি কেউ ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় খাঁটি নিয়তে লাইলাতুল কদরে কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদে অতিবাহিত করে, তবে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করা হবে। (বুখারী)

এই রাতে জিবরাঈল (আ.) এর নেতৃত্বে ফেরেশতাদের একটি দল পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী পুরুষ নামাজ জিকিরে মশগুল থাকেন তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেন। (তাফসীরে মাযহারী)

কদরের রাত কবে- লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ নেই। অনেকেই মনে করেন ২৭ রমজানের রাতে লাইলাতুল কদর নির্ধারিত। তবে এটা সঠিক নয়। কেননা রাসূল (সা.) এটা নির্দিষ্ট করে বলেন নাই। রাসূল (সা.) বলেন, আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছে অতঃপর তা আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব তোমরা রমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাতসমূহে উহাকে তালাশ করো। (বুখারী)


হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা:) বলেন, তোমরা রমজানের শেষ দশ বেজোড় রাত্রে শবে কদর তালাশ করো। (বুখারী)

কিছু কিছু ওলামা কিছু আলামতের ভিত্তিতে ২৭ রমজানের রাতকে কদর হওয়ার সম্ভাবনার কথা বর্ণনা করছেন। তবে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে কদরের রাতকে শুধু ২৭ রজনীতে নির্ধারিত না করে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর হাদিস অনুযায়ী শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিসমূহে অর্থাৎ ২১/২৩/২৫/২৭/২৯ তালাশ করা দরকার।

করণীয়- রমজান মাসে রাসুল (সা.) এর ইবাদতের পরিমাণ বেড়ে যেত, এমনকি শেষ দশকে প্রায় সারা রাত্রি জেগে ইবাদত করতেন।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, যখন রমজানের শেষ ১০ রাত এসে যেত তখন রাসূল রাত জাগরিত থাকতেন। তার পরিবারের সদস্যদের কে জাগিয়ে দিতেন, তিনি অত্যন্ত উদ্দীপনার সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগিতে বিরত থাকতেন এ সংসারিক পারিবারিক বা দাম্পত্য কাজকর্ম বন্ধ করে দিতেন। (বুখারী ও মুসলিম)

এ রাতের জন্য রাসূল ( সা,) হযরত আয়েশা (রা)-কে বিশেষ একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন।

দোয়াটি হল, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি’। (তিরমিজি)

এই রাতে যে ব্যক্তি মাগরিব এশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে পরে সে শবে কদরের একটি অংশ পাবে। যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত সে হাজারো কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত। (ইবনে মাজাহ)

অতএব, আমাদের সকলের উচিত বেশি বেশি নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুস তাসবিহ, উমরী কাজা, নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সাদকা, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইসতেগফার, দোয়া-দুরুদসহ ইত্যাদি।  নফল আমলের প্রতি মনজোগী হওয়া একান্ত জরুরি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। (আমিন)


No comments:

Post a Comment

Featured Post

বিশ্বের টুকিটাকি জানা-অজানা সাধারণ জ্ঞান

#বিশ্বের #টুকিটাকি #জানা-অজানা #সাধারণ জ্ঞান প্ৰঃ আল্লাহ পাক কোন দিন কোন বস্তু সৃষ্টি করেছেন? উঃ (১) শনিবার মাটি সৃষ্টি করেছেন। জ্বীন ...